ছবি সহ রাজশাহী শহরের মধ্যে ১০ টি দর্শনীয় স্থান
ছবি সহ রাজশাহী শহরের মধ্যে ১০ টি দর্শনীয় স্থান
রাজশাহী শহর পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত বাংলাদেশের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন শহর রাজশাহী। আম ও রেশমি বস্ত্র এর জন্য বিখ্যাত রাজশাহী জেলা। প্রাচীন বাংলার ইতিহাস এই রাজশাহী শহরে রয়েছে বিখ্যাত মসজিদ মন্দির ও ঐতিহাসিক স্থাপনা। পদ্মার তীরের এই শহরের পর্যটকদের জনপ্রিয় ভ্রমণের স্থানগুলো সম্পর্কে নিচে ছবিসহ আলোচনা করা হলো।
রাজশাহী নামটির উৎপত্তি সম্পর্কে আলোচনা করতে গেলেই কয়েক শতাব্দী পূর্বে ফিরে যেতে হয়। এই শহরের প্রাচীন নামটি ছিল মহাকাল গড়। পরে রুপান্তরিত হয়ে দাঁড়ায় রামপুর বোয়ালিয়া থেকে রাজশাহী নামটির উদ্ভব কিভাবে হল এর সুস্পষ্ট কোন ব্যাখ্যা নেই।
সূচিপত্রঃছবি সহ রাজশাহী শহরের মধ্যে ১০ টি দর্শনীয় স্থান
১.হযরত শাহ মখদুম রুপোস (রহঃ) এর মাজার
২.রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
৩.রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা
৪.দৃষ্টিনন্দন রাজশাহী কলেজ
৫.রাজশাহীর রাতের কয়েকটি আলোক সজ্জিত রোড
৬.রাজশাহীর সবুজ সিএনবি রোড
৭.রাজশাহীর পদ্মা গার্ডেন
৮.রাজশাহীর টি বাঁধ ও আই বাঁধ
৯.রাজশাহীর শহীদ জিয়া শিশু পার্ক
১০.রাজশাহীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ
১.হযরত শাহ মখদুম রুপোস (রহঃ) এর মাজার
বহু পীর সাধকের পূণ্যভূমি রাজশাহী মহানগরী। যখন এই জনপদের মানুষ কুসংস্কার আর অপপ্রথার নিবিড় অন্ধকারের অতল গহব্বরে ডুবে থেকে নানান কুকর্মে লিপ্ত ছিল, দেব দেবীর নামে নরবলি দেওয়া হতো, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ ছিল প্রকট, তখন থেকেই এই সকল পীর সাধকের আগমন ঘটতে থাকে সুদূর মধ্যপ্রাচ্য ও অন্যান্য অঞ্চল থেকে। তারা অবদ মানুষের মাঝে জ্ঞানের শিক্ষা ছড়ানোর মহৎ উদ্দেশ্যে ও বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায়ের প্রতিজ্ঞাই এবং মনুষ্য সম্প্রদায়ের কল্যাণে জীবনের সবটুকু সময় ক্ষয় করে দেন। তাদের ডিঙ্গাতে হয় নানা প্রতিকূলতার তার দেওয়াল।এমন কি প্রাণ বিসর্জনও দিতে হয় কাউকে কাউকে। এ সকল মহৎ প্রাণের অন্যতম পদ্মা পারে চির সাহিত হযরত শাহ মখদুম রূপোস (রহঃ)।তার মাজারের ছবি নিচে দেওয়া হল
২.রাজশাহী বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর
বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর রাজশাহী মহানগরের কেন্দ্রস্থলে হেতম খাতে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর। প্রত্য তন্ত্র সংগ্রহের দিক থেকে এটি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সংগ্রহশালা।
এখানে প্রবেশ করার জন্য কোন প্রবেশ টিকিটের প্রয়োজন হয় না।এটি শীত এবং গ্রীষ্মকাল অনুযায়ী দুই সময় ভাগ করে জাদুঘরটি খোলা থাকে।
শীত এবং গ্রীষ্ম কালে যেভাবে জাদুঘর টি খোলা থাকে থাকে তার সময়সূচী।
এপ্রিল থেকে অক্টোবর সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ০৫টা পর্যন্ত,এবং নভেম্বর থেকে মার্চ সকাল ১০ টা থেকে বিকাল সাড়ে ০৪টা পর্যন্ত ও শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে বিকাল 5 টা পর্যন্ত দর্শন মূল্য ছাড়াই জাদুঘর সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে।
৩.রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা
প্রায় ৩৩ একর ভূমিতে নির্মিত হয় রাজশাহী কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানা। রাজশাহী শহরের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র এবং শিশু পার্ক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এটা প্রতিদিন সকাল দশটা থেকে বিকাল 5 টা পর্যন্ত খোলা থাকে। অবশ্য গ্রীষ্মকালে সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে সাতটা পর্যন্ত খোলা থাকে। জনপ্রতি ২৫ টাকা করে টিকিট কেটে যে কেউ এখানে প্রবেশ করতে পারবেন। আর পিকনিক স্পটের জন্য আলাদাভাবে ফি জমা দিতে হয়। এখানে ছোটদের বিনোদনের অনেক রাইড আছে। ছোট এবং বড়দের জন্য আছে রাজশাহীর সবথেকে বড় নাগরদোলা এছাড়াও অনেক কিছু আছে এই রাজশাহীর কেন্দ্রীয় উদ্যান ও চিড়িয়াখানায়।
৪.দৃষ্টিনন্দন রাজশাহী কলেজ
১৯৭৩ সালে স্থাপিত হয় রাজশাহী কলেজ। এখন সারা বাংলাদেশ বিখ্যাত এই কলেজ। প্রশাসন ভবনের গারো লাল দালান টি অন্যান্য সৌন্দর্যের প্রতীক। এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা থেকে শুরু করে নানা প্রজাতির গাছ-গাছালি। এই কলেজের সকল সৃষ্টি আপনাকে করবে মহিত।।
৫.রাজশাহীর রাতের কয়েকটি আলোক সজ্জিত রোড
রাজশাহীর প্রতিটি রাস্তা দেখলেই আপনার মন জুড়িয়ে যাবে। আরো বেশি বিমোহিত হতে থাকবেন রাতের আলোক সজ্জিত রাস্তাগুলো দেখলে। অন্যতম হিসেবে রয়েছে তালাইমারী থেকে আলু পট্টি, কাশিয়াডাঙ্গা থেকে সিটি বাইপাস মোড়, রেলগেট থেকে নওহাটা বিমানবন্দর পর্যন্ত , বন্দুকের থেকে সিটি হাট পর্যন্ত, এছাড়াও প্লেন চত্বরে রাস্তা। রাতে এই রাস্তাগুলোতে রিকসাযোগে অথবা মোটরসাইকেল নিয়ে কিংবা হেটে পথ চলতে শুরু করলে আলোর ঝলকানিতে আর পথ ফুরাতে ইচ্ছে করবে না।
রাজশাহীর সবচেয়ে সুন্দর ও শ্যামল রাস্তাগুলোর মধ্যে সিএন্ড বি অন্যতম। খুব সকালে এই রাস্তায় হাঁটলে আপনি অনুভব করতে পারবেন একজন নৈসর্গিক মায়া। সন্ধ্যার জাঁকজমক সিএন্ডবিতো রয়েছেই সেই সাথে রয়েছে এখানকার রানা ভাইয়ের বিখ্যাত পুরি ও গরম রসগোল্লা। সন্ধ্যার পর এখানকার রাস্তায় সব রকমেরখাবার ও ফাস্টফুড পাওয়া যায়।
৭.রাজশাহীর পদ্মা গার্ডেন
রাজশাহী শহর মূলত পদ্মা নদীর পাশে অবস্থিত। আর পদ্মা নদীর পাশ দিয়ে কয়েক কিলোমিটার গেড়ে তৈরি হয়েছে বিভিন্ন ধরনের বিনোদন কেন্দ্র যার মধ্যে পদ্মা গার্ডেন অন্যতম। পদ্মা গার্ডেন একটি উন্মুক্ত বিনোদন কেন্দ্র যেখানে রয়েছে বেশ কিছু মনোরম স্থান বিভিন্ন ধরনের রেহেস্তেরাসহ ভিন্ন ভিন্ন সব অবকাঠামো আর তার সাথে রয়েছে পদ্মা নদীর শীতল বাতাস।
৮.রাজশাহীর টি বাঁধ ও আই বাঁধ
আপনি যদি রাজশাহীর শান্ত সিদ্ধ কিংবা অপরূপ কোথায় যেতে চান তাহলে আপনাকে ঘুরে আসতে হবে রাজশাহীর টি বাঁধ ও আই বাঁধ। এখানে পদ্মা নদীর শীতল হাওয়া নিমিষেই আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। আর এই দুই বাধেই রয়েছে সারি সারি সব গাছ যেগুলোর ছায়া আর সুন্দর যে আপনার মন জুড়িয়ে যাবে। এখানেও বিকাল থেকে সব ধরনের খাবার ও ফাস্টফুড পাওয়া যায়। কি বাঁধের সবথেকে টেস্ট ও সাদ জাতীয় খাবার পেয়ারা মাখানো।
৯.রাজশাহীর শহীদ জিয়া শিশু পার্ক
রাজশাহীর নওদাপাড়ায় অবস্থিত শহীদ জিয়া এই শহরের একটি জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্র। এখানে শিশুদের এবং বড়দের সবার জন্যই নানা ধরনের রাইড রয়েছে। যার অন্যতম সৌন্দর্য হিসেবে রয়েছে দিঘির মাঝখানে কৃত্রিম পাহাড়। শহীদ জিয়া শিশু পার্ক প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা থাকে এই শিশু পার্কের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ২৫ টাকা।
১০.রাজশাহীর লালন শাহ মুক্তমঞ্চ
লালন শাহ মুক্তমঞ্চ রাজশাহীর ঈদগাহ মাঠ এর পাশে অবস্থিত। এই মুক্তমঞ্চে নানা ধরনের সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। মুক্তমঞ্চে আসলে আপনার মন নিমিষেই জুড়িয়ে যাবে। পদ্মা নদীর শীতল হাওয়া এবং এখানকার মুড়ি মাখানো চটপটি ফুচকা দই ফুচকা ইত্যাদি নানা ধরনের খাবার খেয়ে আপনার মন অবশ্যই জুড়িয়ে যাবে।
রাজশাহী নিয়ে পরিশেষ কথা
পরিশেষে বলা যায় আমাদের রাজশাহী শহরের বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুব সুন্দর। আপনারা অবশ্যই রাজশাহীর এই মনোমুগ্ধকর বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘুরে যাবেন। রাজশাহীর মধ্যে আরো অনেক বিনোদন কেন্দ্র আছে এগুলো নিয়ে পরে আপনাদের জন্য আরও একটি আর্টিকেল তৈরি করব ইনশাআল্লাহ।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url